অভার্গীর স্বর্গ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২৩. Help school - Help School

অভার্গীর স্বর্গ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২৩. Help school

Daftar Isi [Tutup]

     অভার্গীর স্বর্গ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২৩


    অভার্গীর স্বর্গ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২৩. Help school


    অভার্গীর স্বর্গ গল্পের গুরুত্বপূর্ণ  সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর যেসব পড়লে ও দেখলে তোমাদের খুবই উপকার হবে। এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন সকল বোর্ড,  অনুধাবন, প্রয়োগ,  উচ্চতার দক্ষতা  মূলক  প্রশ্ন  থেকে নেওয়া হয়েছে। আসা করি এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন পড়লে তোমাদের S.S.C পরীক্ষার  অভার্গীর স্বর্গ গল্প বিষয়ের জন্য খুব উপকারী হবে। 

    আরও পড়ুন :-

    নিমগাছ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২৩

     

    অভার্গীর স্বর্গ সৃজনশীল প্রশ্ন ০১


      গফুর লজ্জিত হইয়া বলিল, বাপ বেটিতে দুবেলা দুটো পেটভরে খেতে পর্যন্ত পাইনে। ঘরের পানে চেয়ে দেখ, বিষ্টি বাদলে মেয়েটিকে নিয়ে কোণে বসে রাত কাটাই, পা ছড়িয়ে শােবার ঠাই মেলে না। মহেশকে একটিবার তাকিয়ে দেখ, পাজরা গােনা যাচ্ছে। দাও না ঠাকুর মশাই। কাহন-দুই ধার, গরুটাকে দুদিন পেটপুরে খেতে দিই। বলিতে বলিতেই গফুর ধপ করিয়া ব্রাহ্মণের পায়ের কাছে বসিয়া পড়িল । তর্করত্ন কহিলেন, আ মর, ছুঁয়ে ফেলবি নাকি? 

    ক. গ্রামে নাড়ি দেখতে জানত কে? 

    খ. রসিক হতবুদ্ধির মত দাড়াইয়া রহিল- কেন? 

    গ. উদ্দীপকের গফুর চরিত্রটি কোন দিক দিয়ে অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের কাঙালী চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।

    ঘ. উদ্দীপকের তর্করত্ন কি অভাগীর স্বর্গ' গল্পের অধর রায়ের সার্থক প্রতিনিধি? তােমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।


    অভার্গীর স্বর্গ সৃজনশীল উত্তর ০১


    ক.

     গ্রামে ঈশ্বর নাপিত নাড়ি দেখতে জানত। 


    খ.

    •  অভাগী মৃত্যুর আগে তার পায়ের ধুলাে চেয়েছে একথা জানতে পেরে রসিক হতবুদ্ধির মতাে দাঁড়িয়ে রইল।

    •  অভাগীর স্বামী রসিক আরেকজনকে বিয়ে করে অন্য গ্রামে বসতি গড়ে। তখন থেকে স্বামীর সঙ্গে অভাগীর কোনাে সম্পর্ক নেই। কিন্তু মৃত্যুপথযাত্রী অভাগী স্বামীর আশীর্বাদস্বরূপ তার পায়ের ধুলাে নিতে চেয়েছে। এই বিষয়টি জানার পর রসিক দুলে হতবুদ্ধির মতাে দাঁড়িয়ে থাকে। কারণ সে ভাবেনি এই পৃথিবীতে তার মতাে এমন লােকের পায়ের ধুলােরও কারও প্রয়ােজন আছে। 


     গ.

    • বতি ও অবহেলিত হওয়ার দিক থেকে উদ্দীপকের গফুর চরিত্রটি 'অভাগীর স্বর্গ' গল্পের কাঙালী চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

    • দরিদের দুঃখ-কষ্ট, ক্রন্দন ধনীর কানে গিয়ে পৌঁছায় না। ধনীরা দরিদ্রদের অবহেলা করে দূরে সরিয়ে রাখে, তাদের বঞ্চিত করে। এতে দরিদ্রের যন্ত্রণা আরও বাড়ে এবং এই বঞ্চনা নিয়েই তাদের বেঁচে থাকতে হয়।

    • ' অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে কাঙালী সমাজে প্রচলিত নীচ জাতের বলে তাকে নিগৃহীত হতে হয়েছে। মায়ের সত্ত্বারের জন্য বেলগাছটি চাইতে গিয়ে জমিদারের লােকজন দ্বারা নিগৃহীত ও অত্যাচারিত হয়েছে। নীচ জাতের বলে তার স্পর্শ থেকে বাঁচতে তাকে দুর দুর করেছে তারা। উদ্দীপকের গফুরও দরিদ্র বলে অবহেলিত, বঞ্চিত হয়েছে। মুসলমান বলে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের তর্করত্ন তাকে অস্পৃশ্য মনে করেছে। এভাবে অবহেলা, বঞ্চনার দিক থেকে গফুর চরিত্রটি কাঙালী চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।


    ঘ.

    •  নিষ্ঠুরতা এবং কুলগর্বে উদ্দীপকের তর্করত্ন ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অধর রায়ের সার্থক প্রতিনিধি।

    •  এক সময় বাঙালি হিন্দু সমাজে জাতবৈষম্য প্রবল আকার ধারণ করেছিল। জাতভেদের কারণে মানবতা বিভাজিত হয়ে পড়েছিল। উঁচু জাতের লােকেরা নীচ জাতের লােকদের ঘৃণা করত। তারা পারস্পরিক স্পর্শকেও অপবিত্র মনে করত।

    • অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে এই অস্পৃশ্যতার চিত্র পাই গােমস্তা অধর রায়ের আচরণে। কাঙালী দুলের ছেলে বলে সে যেখানে দাড়িয়েছিল। সেখানে গােবরজল ছিটিয়ে দিতে বলে সে । এখানেই শেষ নয়, দরিদ্র কাঙালীকে সামান্য একটা গাছ চাইতে এসে মার খেয়ে শুন্য হাতে ফিরতে হয়েছে। উদ্দীপকের গফুরও ব্রাহ্মণ তর্করত্নের দ্বারা অস্পৃশ্যতার শিকার হয়েছে। ধনী ব্রাহ্মণ তর্করত্নের কাছে সামান্য খড় চেয়ে সে ব্যর্থ হয়েছে। গফুরের দুঃখে তর্করত্নের হৃদয় গলেনি, বরং তার নিষ্ঠুরতাই এতে প্রবলভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

    • তর্করত্ন ও অধর রায় উভয়ই ধনী, নিষ্ঠুর ও কুলগর্বে গর্বিত। এ কারণেই গফুর ও কাঙালীর মতাে দরিদ্র-অসহায় মানুষেরা তাদের। দ্বারা অবহেলিত-অত্যাচারিত হয়। এ দিক থেকে উদ্দীপকের তর্করত্ন ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অধর রায়ের সার্থক প্রতিনিধি।


    অভার্গীর স্বর্গ সৃজনশীল প্রশ্ন ০২


     সাপ ধরার মন্ত্র শিখে মৃত্যুঞ্জয় মস্তবড় সাপুড়ে হয়ে উঠল। একদিন সাপ ধরতে গেলে, বিষধর সাপের দংশনে সে আহত হয়। তার শ্বশুরের দেওয়া সব তাবিজ-কবজ তার হাতে বেঁধে দেওয়া হলাে আর সেই সাথে বহু সংখ্যক ওঝা মিলে বহু দেব-দেবীর দোহাই এবং ঝাড়ফুক করেও তাকে বাঁচাতে পারল না ।

    ক. গ্রামে কে নাড়ি দেখতে জানত? 

    খ. “মা মরেচে ত যা নীচে নেবে দাড়া”– অধর রায়ের এরূপ উক্তির কারণ কী? 

    গ. উদ্দীপকে অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের যে বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটেছে তা ব্যাখ্যা কর । 

    ঘ. উদ্দীপকে অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের একটি বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটলেও গল্পের মূল বিষয়টি অনুপস্থিত। মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।


    অভার্গীর স্বর্গ সৃজনশীল উত্তর ০২


      ক.

     গ্রামে ঈশ্বর নাপিত নাড়ি দেখতে জানত।


     খ.

    • "মা মরেচে ত যা নীচে নেবে দাঁড়া”– অধর রায়ের এমন উক্তির কারণ অশৌচের ভয়।

    • কাঙালী মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণের জন্য মায়ের মৃত্যুর পর কাঠের ব্যবস্থা করতে জমিদারের কাছারি বাড়ি যায়। কাছারি বাড়ির কর্তা গােমস্তা অধর রায় সেই সময় সন্ধ্যাহ্নিক শেষ করে বাইরে আসেন। কাঙালী তাকে দেখে কান্নাকাটি করে এবং মায়ের মৃত্যুর কথা বলে। অধর রায়ের মনে হয় কাঙালী মড়া ছুঁয়ে এসেছে, সে এখানকার কিছু ছুঁয়ে ফেলতে পারে। এ কথা ভেবে অশৌচের ভয়ে অধর রায় কাঙালীকে উদ্দেশ করে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেন।



    গ.

    •  উদ্দীপকে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের অবৈজ্ঞানিক বা টোটকা চিকিৎসা দেওয়ার দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে।

    • সঠিক চিকিৎসা মানষের জীবন বাঁচায়। রােগ নির্ণয় করতে না পারলে এবং সঠিক চিকিৎসা না করালে মানুষ অকালমৃত্যুর শিকার হয়। এদেশের গ্রামাঞ্চলে এখনও টোটকা চিকিৎসা দেওয়া হয়, যা সাময়িকভাবে মানুষকে সুস্থ করলেও রােগ নির্মূলে ব্যর্থ হয়।

    • উদ্দীপকে দেখা যায় সাপড়ে মত্যুঞ্জয় সাপ ধরতে গিয়ে সাপের দংশনে আহত হয়। তার শ্বশুর ও অন্যান্য ওঝা মিলে ঝাড়ফুঁক করে মৃত্যঞ্জয়কে বাঁচানাের চেষ্টা করে যা চিকিৎসাশাস্ত্র সমর্থন করে না, ফলে তার মৃত্যু হয়। উদ্দীপকের মতাে অভাগীর স্বর্গ’ গল্পেও টোটকা চিকিৎসার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। কাঙালীর মা অভাগী অসুস্থ হলে প্রতিবেশীরা তাকে দেখতে আসে এবং বিভিন্ন ধরনের টোটকা চিকিৎসার উপায় বলে। কেউ হরিণের শিং ঘষা জল, কেউ গেটে-কড়ি পুড়িয়ে মধুতে মাড়িয়ে খেতে বলে । কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভাগী মত্যর কোলে ঢলে পড়ে। কোনাে ওষুধ তার রােগ সারাতে পারে না। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকে আলােচ্য গল্পের যে বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটেছে তা হলাে প্রতিবেশীদের টোটকা চিকিৎসার ।


    ঘ.

    •  উদ্দীপকে ‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের একটি বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটলেও গল্পের মূল বিষয়টি অনুপস্থিত।- মন্তব্যটি যথার্থ ।

    •  এই পৃথিবীতে সব মানুষ সমান। কিন্তু কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থে বিভেদের দেয়াল তুলে রাখে। এই বৈষম্যের নির্মমতা মানব সমাজে এমনভাবে জেঁকে বসেছে যে মানুষ প্রতিনিয়ত নিষ্পেষিত হচ্ছে।

    •  উদ্দীপকে এক সাপুড়ের সাপের দংশনে আহত হওয়ার কথা প্রকাশ পেয়েছে। সেই সঙ্গে প্রকাশ পেয়েছে অবৈজ্ঞানিকভাবে ঝাড়ফুঁক ও দেব-দেবীর দোহাই দিয়ে তাকে বাঁচানাের চেষ্টা করার কথা। কিন্তু ওঝারা শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচাতে ব্যর্থ হয়। উদ্দীপকের এই অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসাপদ্ধতির দিকটি অভাগীর স্বর্গ’ গল্পের কবিরাজি চিকিৎসা ও টোটকা চিকিৎসার বিষয়টিকে মনে করিয়ে দেয় । যেখানে কাঙালী তার মায়ের চিকিৎসার জন্য কবিরাজের কাছ থেকে বড়ি নিয়ে আসে এবং প্রতিবেশীরা তাদের জানা টোটকা চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি বর্ণনা করে। কিন্তু এই বিষয়টি আলােচ্য গল্পের মূল বিষয় নয়। আলােচ্য গল্পের মূল বিষয় হলাে সামন্তবাদের নির্মম রূপ এবং নিচু শ্রেণির হতদরিদ্র মানুষের দুঃখ-কষ্ট ও যন্ত্রণা, যা উদ্দীপকে প্রকাশ পায়নি।

    • 'অভাগীর স্বর্গ' গল্পে একদিকে প্রকাশ পেয়েছে অধর রায়ের মতাে ধনী জমিদার গােমস্তাদের নির্মমতা-নির্দয়তা, অন্যদিকে প্রকাশ পেয়েছে কাঙালী-অভাগীদের মতাে নিচু শ্রেণির সুবিধাবঞ্চিত মানুষের দুর্ভোগ। এছাড়াও প্রকাশ পেয়েছে বর্ণবৈষম্য, যা উদ্দীপকে অনুপস্থিত। উদ্দীপকে কেবল আলােচ্য গল্পে প্রকাশিত চিকিৎসাব্যবস্থার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ ।


    তথ্যসংগ্রহ :- পাঠ্য বই , প্যান্জারী  পাঠ সহায়ক বই , দেনাপাওনা  ও পড়ে পাওয়া গল্প  থেকে।