মানুষ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২৩. Help School - Help School

মানুষ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২৩. Help School

Daftar Isi [Tutup]

     মানুষ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর -২০২৩


    মানুষ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২৩. Help School.


    মানুষ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ  সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর যেসব পড়লে ও দেখলে তোমাদের খুবই উপকার হবে। এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন সকল বোর্ড,  অনুধাবন, প্রয়োগ,  উচ্চতার দক্ষতা  মূলক  প্রশ্ন  থেকে নেওয়া হয়েছে। আসা করি এই সকল সৃজনশীল প্রশ্ন পড়লে তোমাদের S.S.C পরীক্ষার মানুষ কবিতা বিষয়ের জন্য খুব উপকারী হবে। 

    আরও পড়ুন :-

    ঝর্ণার গান কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর - ২০২৩


     মানুষ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ০১


    উদ্দীপক-১ : চৌধুরী সাহেব তার স্ত্রীর কুলখানিতে শুধু অভিজাত ব্যক্তিবর্গ, আত্মীয়স্বজন, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দাওয়াত দেন। কিছু গরিব ও দুস্থ লােক সেখানে উপস্থিত হলে তিনি তাদের তাড়িয়ে দেন। 

    উদ্দীপক-২ : মাদার তেরেসা ছিলেন এক মহীয়সী নারী। তাঁর সেবার কাজ কোনাে দেশ, জাতি, ধর্ম কিংবা সমাজে সীমাবদ্ধ ছিল না । অসহায়, অনাথ, প্রতিবন্ধী ও মুমূর্ষ মানুষের সেবায় তিনি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেন। কখনাে জানতে চাননি রােগীর ধর্মপরিচয় । কখনাে কাউকে তার দুয়ার থেকে ফিরিয়ে দেননি। 

     ক, মােল্লা সাহেব মুসাফিরকে কী প্রশ্ন করেছিল?

     খ, “ঐ মন্দির পূজারীর, হায় দেবতা, তােমার নয়!” কথাটি দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন? 

    গ. উদ্দীপক-১ এ মানুষ' কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।

     ঘ. উদ্দীপক-২ এ মানুষ' কবিতার কবির প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে”- মন্তব্যটির সপক্ষে তােমার মতামত দাও। 


    মানুষ কবিতার সৃজনশীল উত্তর ০১

     

    ক.

     মােল্লা সাহেব মুসাফিরকে নামাজ পড়া বিষয়ে প্রশ্ন করেছিল, সে বলেছিল— নমাজ পড়িস বেটা?

     খ.

    • মন্দিরের পূজারির কাছে খাবার চেয়ে না পেয়ে ভিখারি আক্ষেপ করে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন। 

    • 'মানুষ’ কবিতায় সাত দিন অনাহারে ক্লিষ্ট এক ভিখারি খাবারের আশায় এক মন্দিরের দ্বারে এসে করাঘাত করে, পূজারিকে ডেকে তােলে। পথিকের ডাক শুনে পূজারি ভাবে নিশ্চয়ই কোনাে দেবতা হবেন এবং দেবতার কাছ থেকে বর চেয়ে নিয়ে তিনি রাজা হয়ে যাবেন। এই ভেবে দরজা খুলে দেখে এক ক্ষুধার্ত ভিখারি খাবার চাইছে। পূজারি তখন বিরক্ত হয়ে তাকে খাবার না দিয়ে সহসা মন্দিরের দ্বার বন্ধ করে দেয়। পূজারি তখন বুঝতে পারে মন্দিরে সাধারণ মানুষের কোনাে অধিকার নেই। তাই ক্ষুধার্ত ভিখারি প্রশ্নোক্ত কথাটি বলে ।

    গ.

    • উদ্দীপক-১ এ মানষ' কবিতার ক্ষুধার্ত পথিকের প্রতি মােল্লা ও পুরােহিতের অমানবিক আচরণের দিকটি ফুটে উঠেছে।

    • সৃষ্টিকর্তার কাছে সব মানুষ সমান, কোনাে ভেদাভেদ নেই। মানুষে মানুষে যে পার্থক্য তা মানুষের তৈরি। সাম্যের দৃষ্টিতে ধনী-দবিদ। সাদা-কালাে, উচ-নিচ পথিবীর সব মানুষ সমান। তাই হীন দরিদ্র বলে কাউকে অবহেলা করা উচিত নয়। 

    • উদ্দীপক- এ জল কনানিতে আসা উঁচু শ্রেণি এবং নিচু শ্রেণির মানুষের সঙ্গে চৌধুরী সাহেবের আচরণের দিকটি তলে ধরা হয়েছে। এখানে চৌধুরী সাহেব অভিজাত ব্যক্তিবর্গ ও আত্মীয়স্বজনকে তার স্ত্রীর কুলখানিতে দাওয়াত দিয়েছেন। সেই অনুষ্ঠানে কিছু গরিব ও দুস্থ লোক উপস্থিত হলে তিনি তাদের তাড়িয়ে দিয়েছেন। এই বিষয়টি মানুষ কবিতার ক্ষুধার্ত পথিককে মােল্লা ও ও দুস্থ লোেক উপস্থিত হলে তিনি তাদের তাড়িয়ে দিয়েছেন। এই বিষয়টি মানুষ' কবিতা পথিককে মােল্লা ও যার সঙ্গে সাদশ্যপূর্ণ। মসজিদে শিরনির বেচে যাওয়া গােশতরুটি মােল্লা ক্ষুধার্ত পথিককে না দিয়ে ভাল গয়ে মসজিদ বন্ধ করে রাখে। পরােহিত ভজনালয় খুললেও জীর্ণ-বস্ত্র, শাণ গাত্রের ভুখারিকে কোনাে সাহায্য না করে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে।


    ঘ.

    • “উদ্দীপক-২ এ মানুষ’ কবিতার কবির প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে।”- মন্তব্যটি যথার্থ ।

    • সাম্যবাদের দষ্টিতে পথিবীর সব মানুষ সমান। কারণ তারা একই স্রষ্টার সৃষ্টি এবং একই চন্দ্র-সূর্যের জোছনা ও উত্তাপ নিয়ে বাঁচে। তাদের জন্ম-মৃত্যুর প্রক্রিয়াও এক ও অভিন্ন। কাজেই ধর্ম, বর্ণ, অর্থ-বিত্ত দিয়ে কাউকে বিচার করা উচিত নয়।

    •  উদ্দীপক-২-এ মাদার তেরেসার অসামান্য মানবিকতার সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। এখানে মাদার তেরেসার মানবসেবামূলক কর্মকাণ্ডে তার মানবীয় দিকটি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। তিনি ধর্ম-বর্ণ, উচু-নিচু, কালাে-সাদার মধ্যে কোনােরূপ পার্থক্য না করে মানুষকে মানুষ হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন। উদ্দীপকে মাদার তেরেসার মানবিকতার যে প্রতিফলন ঘটেছে তা মানুষ’ কবিতার কবিও প্রত্যাশা। করেছেন। তিনি সাম্যবাদের দৃষ্টিতে সব মানুষকে সমান হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। সেখানে ধর্ম-বর্ণ কিংবা অর্থ-বিত্র দিয়ে মানুষকে পাথক্য করা হবে না। প্রত্যেকেই মানুষ পরিচয়ে প্রত্যেকের কাছে মর্যাদা লাভ করবে।

    •  'মানুষ' কবিতায় একজন ক্ষুধার্ত পথিক মন্দিরের পুরােহিত এবং মসজিদের মোেল্লার কাছে ক্ষুধার অন্ন প্রার্থনা করে প্রতাখাত ও বিতাড়িত হয়েছে। তারা খাবার নিয়ে মসজিদ-মন্দিরে তালা লাগিয়েছে। কবি তাদের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ হয়ে এর প্রতিকারের জন্য হাতডি শাবল চালাতে চেঙ্গিস গজনি মামুদ, কালাপাহাড়কে স্মরণ করেছেন। কবির এ প্রত্যাশা মূলত মানুষ হিসেবে মানষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, যা পাপকে মাদার তেরেসার কর্মকাণ্ডে প্রতিফলিত হয়েছে। এই দিক থেকে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।


    মানুষ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ০২ 


    পৃথিবীর সমুদয় নিজ পরিজন।

     সন্তোষের সিংহাসনে বাস করে মন।।

    আত্মার সহিত সব সমতুল্য গণে। 

    মাতা পিতা জ্ঞাতি ভাই ভেদ নাহি মনে৷৷ 

    ক. আজারি’ শব্দের অর্থ কী?

     খ. ‘ঐ মন্দির পূজারীর, হায় দেবতা, তােমার নয়।'- ব্যাখ্যা কর। 

    গ. উদ্দীপকে মানুষ’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা বর্ণনা কর । 

    ঘ. উদ্দীপকটি মানুষ’ কবিতার সমগ্র ভাবকে প্রকাশ করে না।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।


    মানুষ কবিতার সৃজনশীল উত্তর ০২


    ক.

    ‘আজারি’ শব্দের অর্থ রুগণ বা ব্যথিত। 

    খ.

    • পূজারির কাছ থেকে খাদ্য চেয়ে এক ভুখারি প্রত্যাখ্যাত হয়ে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলে সে তার অনুভূতি প্রকাশ করেছে। 

    • অসহায়, নিরন্ন এক পথিক সারাদিন পথে পথে ঘুরে ক্ষুধায় ক্লান্ত হয়ে মন্দিরে গিয়ে পূজারির কাছে সামান্য খাবার প্রার্থনা করেছে । অন্যদিকে দুয়ার খােলার আগে পূজারি ভেবেছে দেবতা বুঝি তার ডাকে সাড়া দিয়ে দরজায় এসেছেন, তিনি তাকে বর দিবেন। এই ভেবে দরজা খুলে পথিককে দেখে এবং তার ক্ষুধার কথা শােনামাত্র পুরােহিত রাগে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। এভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ব্যথিত হয়ে পথিক বলেছে যে, ঐ মন্দির দেবতার, কিন্তু পূজারির দখলে, তাতে মানুষের স্থান নেই।


    গ.

    • উদ্দীপকে মানুষ' কবিতায় প্রকাশিত সাম্যবাদী চেতনার দিকটি ফুটে উঠেছে।

    •  মানুষে মানুষে যে ভেদাভেদ তা মনুষ্যসৃষ্ট, কৃত্রিম, মেকি। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রত্যেক মানুষই সমান। তিনি মানুষের মাঝে কোনাে ভেদাভেদ সৃষ্টি করেননি। মানুষই এই বৈষম্য সৃষ্টি করেছে আবার মানুষই পারে সব ভেদাভেদ মুছে দিয়ে জগৎ-সংসারে সাম্যবাদী চেতনার উত্তরণ ঘটাতে।

    •  উদ্দীপকের কবিতাংশে সাম্যবাদী চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে। কবি এখানে পৃথিবীর সব মানুষকে নিজের পরিজন মনে করেছেন। সবার সঙ্গে আত্মার সংযােগ স্থাপন করে একটি বৃহৎ পরিবার হিসেবে কল্পনা করেছেন, যেখানে কোনাে ভেদাভেদ থাকবে না। এই চেতনাটি মানুষ' কবিতার মূল চেতনাকে প্রতীকায়িত করেছে। কবিও চেয়েছেন বিভেদহীন সমাজ গড়তে। তিনি এখানে দেখিয়েছেন। যে, পৃথিবীতে অনেক ধর্ম-জাতি-গােত্রের মানুষ রয়েছে। তারা তাদের নিজ নিজ ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থকে শ্রদ্ধা করে। এর জন্য জীবন বাজি রাখে। কিন্তু অসহায় মানুষকে সাহায্য করে না। কবি এ চেতনাকে পরিত্যাগ করে সাম্যবাদী চেতনায় সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন। কবির কাছে মানুষের চেয়ে কোনােকিছু বড় নেই। কবির এই সাম্যবাদী চেতনার প্রকাশ ঘটেছে উদ্দীপকের কবিতাংশে।


    ঘ.

    •  “উদ্দীপকটি মানুষ’ কবিতার সমগ্র ভাবকে প্রকাশ করে না।”- মন্তব্যটি যথার্থ। কারণ উদ্দীপকের বিষয় ছাড়াও মানুষ’ কবিতায় নানাবিধ ভাবের প্রকাশ ঘটেছে।

    •  মানুষের সঙ্গে মানুষের রয়েছে চিরন্তন ও অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। কিন্তু মানুষ নিজ স্বার্থের জন্য সেই সম্পর্ককে অস্বীকার করে নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে রেখেছে, যা মানবিকতাকে ধ্বংসের মুখে পাঠিয়ে দিচ্ছে। বস্তুত জাতি-ধর্মের পরিচয়ে নয়, মনুষ্যধর্মের পরিচয়ে পরিচিত হতে পারাটাই মানব জন্মের সার্থকতা।

    • উদ্দীপকের কবিতাংশ সাম্যবাদী চেতনার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এখানে সারা পৃথিবীকে তথা পৃথিবীর সব মানুষকে কবি নিজের পরিজন বলে ঘােষণা করেছেন। মানুষের সঙ্গে মানুষের কোনাে বিভেদ তিনি স্বীকার করেননি। কবির এই সাম্যবাদী চেতনা মানুষ’ কবিতার অন্যতম প্রধান উপজীব্য। তবে ওই বিষয় ছাড়াও কবিতায় নানামুখী ভাব ও বিষয়ের অবতারণা ঘটেছে। 

    • 'মানুষ’ কবিতায় কবি সাম্যবাদী চেতনার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ চেতনা উদ্দীপকের প্রধান বিষয়। তবে কবিতায় ওই চেতনার প্রকাশ ঘটাতে গিয়ে কবি মানুষের মাঝের নানামুখী নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যের দিকটি উন্মােচিত করেছেন। এরই সূত্র ধরে কবি পথিবীর নানা ধর্ম, ধর্মগ্রন্থের প্রসঙ্গ উত্থাপনের পাশাপাশি ধর্মের রক্ষকদের হীন মানসিকতা এবং তাদের স্বার্থান্ধ চিন্তা-চেতনার দিকটি তুলে ধরেছেন যা উদ্দীপকে অনুপস্থিত। কবিতায় মানুষের হৃদয়হীনতার যে দিকের প্রকাশ ঘটেছে সেটাও উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি মানুষ’ কবিতার সমগ্র ভাব ধারণ করে না ।


    তথ্যসংগ্রহ :- পাঠ্য বই , লেকচার ও  অনুপম পাঠ সহায়ক বই , মডেল টেস্ট   থেকে।